কানাডায় পড়াশোনা করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে

কানাডায় পড়াশোনা করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে সেই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আজকে এই পোস্টে আমি বিশদভাবে আলোচনা করব। আপনারা মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়বেন। যেন কোন পয়েন্ট ছুটে না যায়। দেশের উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থা, বৈচিত্র্যময়, সংস্কৃতি

এবং স্বাগত পরিবেশের কারণে শিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরমধ্যে একটি জনপ্রিয় দেশ। বিভিন্ন দেশের স্টুডেন্টরা কানাডাতে পড়াশোনা করার জন্য সুযোগ খোঁজে। তবে যেসব বিষয় মাথায় রেখে অগ্রসর হতে হবে সেগুলো আজকে এখানে আলোকপাত করবো-

পেজ সূচিপত্র: কানাডায় পড়াশোনা করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে

কানাডায় পড়াশোনা করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে

কানাডায় পড়াশোনা করতে হলে- প্রথমত গবেষণা করতে হবে এবং একটি প্রতিষ্ঠান চয়েস করতে হবে। আপনার আগ্রহের বিষয়টি পছন্দ করতে হবে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানে বিস্তৃত প্রোগ্রাম পড়াশোনার জন্য প্রস্তাব করা যেতে পারে। একটি প্রোগ্রাম পছন্দ করতে হবে।

প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে গবেষণা করতে হবে। খ্যাতি, অবস্থান, সুবিধা, স্টেশন কি এবং ছাত্র সহায়তা সুযোগ সুবিধা দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। টরেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ, কলাম্বিয়া এবং ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির মতো কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বব্যাপী পরিচিত।

কিছু একাডেমিক প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে যেমন-  জিপিএ, পূর্বশর্ত কোর্স এবং কোন নির্দিষ্ট যোগ্যতা। এছাড়া ভাষা দক্ষতার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি বা ফার্সি ভাষার দক্ষতার প্রয়োজন বেশি হয়। সাধারণত পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে- IELTS ইংরেজির জন্য TOEFL এবং ফ্রেঞ্চের জন্য TEF বা DELF। এবং যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন সেই প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী আপনার স্কোরগুলো নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়াও কিছু প্রাসঙ্গিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিছু প্রোগ্রামের জন্য SAT, GRE বা GMAT এর মত পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। আপনার প্রোগ্রামের জন্য এই প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে।

আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর বিষধর ১০টি সাপ

আবেদন প্রক্রিয়া

আবেদন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই আপনার একাডেমিক ট্রানস্ক্রিপ্ট লাগবে, ভাষা পরীক্ষার স্কোর, সুপারিশের চিঠি এবং যে উদ্দেশ্যে যাবেন তার বিবৃতি এবং একটি জীবন বৃত্তান্ত তৈরি করতে হবে। কিছু প্রোগ্রামের জন্য একটি পোর্টফোলিও প্রয়োজন হতে পারে।

বেশিরভাগ ক্যানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানের একটি অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের পোর্টালে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে নথি আপলোড করুন এবং আবেদন ফ্রি জমা দিতে হবে।

এক্ষেত্রে আবেদনের সময় সীমার প্রতি গভীর মনোযোগ বা খেয়াল রাখতে হবে। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণত দুইটি সময়ে এই আবেদন প্রক্রিয়া গুলো সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। সেপ্টেম্বর মাস এবং জানুয়ারিতে ৮ থেকে ১২ মাস আগে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়।

টিউশন কি

এক্ষেত্রে আপনার প্রোগ্রাম বা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে টিউশন ফি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। স্নাতক প্রোগ্রাম গুলি প্রতি বছর CAD ১৫ হাজার থেকে CAD ৩০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে যদি প্রোগ্রামগুলো বেশি হয় সে ক্ষেত্রে টিউশন ফি কম বেশি হয়ে থাকে।

এখানে আরেকটি বিষয় জেনে রাখা ভালো কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান সরকার বা অন্যান্য সংস্থা দ্বারা বৃত্তি, বাৎসরিক, আর্থিক ও সহায়তা দিয়ে থাকে। যেমন- ভ্যানিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ এবং কানাডা আসিয়ান স্কলারশিপ।

পাশাপাশি কানাডায় আন্তর্জাতিক ছাত্রদের তাদের পড়াশোনার সময় কিছু খন্ডকালীন কাজের ব্যবস্থা বা অনুমতি প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে তাদের পড়াশোনা এবং জীবনযাত্রা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারে।

আরো পড়ুন: দাঁতের রোগ ও প্রতিকার- দাঁত ভালো রাখার ৬টি উপায়

স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন একটি কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার গ্রহণযোগ্যতা পত্র পাওয়ার পর আপনি একটি স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারেন। এটি ছয় মাসের বেশি কানাডায় অধ্যয়নের জন্য অপরিহার্য।

অনলাইন আবেদন ইমিগ্রেশন, রিফিউজিস এন্ড সিটিজেনশিপ কানাডা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে যে নথি প্রদান করতে হবে তা হল-

স্বীকৃতির প্রমাণ (প্রতিষ্ঠান থেকে চিঠি) 

পরিচয় এর প্রমাণ  (পাসপোর্ট)

আর্থিক সহায়তার প্রমাণ (ব্যাংক বিবৃতি, বৃত্তি ইত্যাদি) 

ব্যাখ্যা পত্র (যদি প্রয়োজন হয়)

আরো পড়ুন: ব্যাংক সম্পর্কিত নানাবিধ সমস্যা ও তার উপায়ন্তর

বায়োমেট্রিক এবং মেডিকেল পরীক্ষা আপনার বসবাসের দেশের উপর নির্ভর করে আপনাকে বায়োমেট্রিক আঙ্গুলের ছাপ এবং ছবি প্রদান করতে হবে এবং একটি মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হবে। স্টাডি পারমিট প্রক্রিয়াকরণের কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে তাই খুব দ্রুত আবেদন করতে হবে আপনার জাতীয়তার উপর ভিত্তি করে। আপনাকে একটি অস্থায়ী ভিসা এবং ইলেকট্রনিক ট্রাভেল এসব জন্য আবেদন করতে হবে।

আগমনের জন্য প্রস্তুতি

ভ্রমণের ব্যবস্থা একবার যদি আপনার স্টাডি পারভেট অনুমোদিত হয় এরপর আপনি কানাডায় আপনার ফ্লাইট বুক করতে পারেন। আপনার পাসপোর্ট স্টাডি পারমিট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথিগুলো সাথে আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। এবার ক্যাম্পাসে আবাসন বা এপার্টমেন্ট বা হোমস্টে আগে থেকেই থাকার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

কানাডায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিছু প্রদেশ স্বাস্থ্য বীমা পরিকল্পনা অফার করে থাকে। অন্যথায় আপনাকে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বীমা করে নিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। এক্ষেত্রে ক্যাম্পাসের সাথে নিজেকে পরিচিতি করতে, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে এবং কানাডায় বসবাস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে এগুলোতে যোগ দিতে হবে।

আরো পড়ুন: ORS এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আগমনের পর

পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে হবে তবে কাজের সুযোগ এবং ইন্টারসিপ এর সুযোগ নিন যা আপনার বাড়তি আয় এবং অভিজ্ঞতা বাড়াতে পারে। এছাড়া আপনার প্রতিষ্ঠানের দ্বারা ছাত্র সুযোগ সুবিধা গুলো ব্যবহার করুন যেমন- একাডেমিক পরামর্শ,ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য সহায়তা।

পাশাপাশি ছাত্র সংগঠন এবং সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাথে নিজেকে সুন্দরভাবে মানিয়ে নিতে শিখুন এবং কানাডায় আপনার অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

পোস্ট গ্রাজুয়েশন ওয়ার্ক পারমিট আপনার পড়াশোনার শেষ করার পরে একটি PGWP এর জন্য যোগ্য হতে পারেন। যা আপনাকে কানাডায় তিন বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ করে দেবে। আপনি যদি এক্সপ্রেস এন্ট্রি সিস্টেমের অধীনে কানাডিয়ান এক্সপেরিয়েন্স ক্লাস এর মত প্রোগ্রামের মাধ্যমে কানাডা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তাহলে এই ধরনের পরিকল্পনা গুলো মূল্যবান হতে পারে।

স্থায়ী ভাবে থাকার বিকল্প গুলি অন্বেষণ করুন যদি আপনার ইচ্ছা থাকে। এক্সপ্রেস এন্টি, প্রাদেশিক নমিনি প্রোগ্রাম এবং আটলান্টিক ইমিগ্রেশন পাইলটের মতো প্রোগ্রামগুলো বসবাসের জন্য সুদূরপ্রসারী।

এই পদক্ষেপ গুলি অনুসরণ করে আপনি শিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়ার প্রক্রিয়াটি সফলভাবে করতে পারেন এবং সেখানে আপনার একাডেমিক এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সার্বিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দরভাবে সেখানে স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারেন।

আরো পড়ুন: খতিব দিয়ে সুন্নতে খাতনা করার সহজ নিয়ম 

কানাডায় স্কলার্শিপ পাওয়ার উপায়

কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই ভালোভাবে জানতে হবে এবং এখানে কিছু বিষয় উল্লেখ করলাম যা আপনাকে স্কলারশিপ পাওয়াতে সহায়তা করবে।

একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব উচ্চমাধ্যমিক কর্মদক্ষতা বজায় রাখুন এখানে উল্লেখ করা ভালো যে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি গুলো সেরা পারফরম্যান্স করার শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান করে থাকে।

গবেষণা বৃত্তি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা পরিচালনাকারী স্নাতক ছাত্রদের জন্য ভ্যানিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ এর মত বৃত্তি প্রদান করে থাকে।

সরকারি বৃত্তি কানাডা গ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম এবং প্রাদেশিক স্কলারশিপ এর মত সরকারের অর্থায়নে বৃত্তি প্রদান করে থাকে।

ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ এন্ট্রান্স স্কলার্শিপ, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট স্কলারশিপ এবং প্রোগ্রাম নির্দিষ্ট পুরস্কার সহ স্কলারশিপ অফার করে। তার জন্য আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে চেক করুন।

প্রাইভেট এবং এনজিও স্কলারশিপ বেসরকারি সংস্থা, এনজিও বা ফাউন্ডেশন যেগুলি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের সাহায্য করে থাকে এবং স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এইসব বিষয়গুলি আপনাকে নিজ উদ্যোগে সম্পন্ন করতে হবে।

 কানাডায় মাস্টার্স করার যোগ্যতা

যাই হোক কানাডায় মাস্টার্স করার জন্য কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদন্ড অবশ্যই পূরণ করতে হবে। মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্য যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা এবং প্রক্রিয়ার সম্পর্কে এখানে উল্লেখ করা হলো-

একাডেমিক যোগ্যতা

স্নাতক ডিগ্রী কানাডায় মাস্টার্স করার জন্য অবশ্যই আপনাকে যোগ্য হতে হবে। এক্ষেত্রে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। সাধারণত কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো  চার বছরের স্নাতক ডিগ্রী আশা করে। যাই হোক কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে। 

নূন্যতম জিপিএ বেশিরভাগ কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামের ভর্তির জন্য নূন্যতম জিপিএ যেমন- জিপিএ  3.0 আউট অফ 4.0 প্রয়োজন।

আরো পড়ুন: কিভাবে ফ্রিলান্সিং শিখলে মাসে আয় হবে ৫০ হাজার টাকা

ভাষার দক্ষতা

ইংরেজি ভাষা যদি ইংরেজি আপনার প্রথম ভাষা না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে পরবর্তী শিক্ষা অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে।

IELTS এর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ কানারিয়ান ইউনিভার্সিটি তে ন্যূনতম আই ই এল টি এস স্কোর প্রয়োজন ৬.৫ থেকে ৭.০

TOEFL-এর ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ভিত্তিক পরীক্ষায় নূন্যতম ৯০ থেকে ১০০ স্কোর প্রয়োজন।

PTE এর ক্ষেত্রে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ থেকে ৭০ পর্যন্ত নূন্যতম স্কোর প্রয়োজন।

ফরাসি দক্ষতা আপনি যদি একটি ফরাসি ভাষার প্রতিষ্ঠানে বা ফরাসি ভাষায় প্রোগ্রাম আবেদন করেন তাহলে আপনাকে ফরাসি ভাষার দক্ষতা পরিচয় দিতে হবে। স্বীকৃত পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে TEF, DALF বা DELF

প্রমিত পরীক্ষা

স্নাতক রেকর্ড পরীক্ষা কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রাম বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান এবং অর্থনীতির মত বিষয়ে জিআরই স্কোরের প্রয়োজন বা সুপারিশ করতে হয়।

স্নাতক ব্যবস্থাপনা ভর্তি পরীক্ষা ব্যবসা সম্পর্কিত মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য যেমন একটি এমবিএ বা মাস্টার্ড অফ ম্যানেজমেন্ট অনেক বিশ্ববিদ্যালয় জি এম টি এ স্কোর এর প্রয়োজন হয়

কাজের অভিজ্ঞতা

সবসময় বাধ্যতামূলক নাহলেও কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রাম বিশেষ করে ব্যবসায় জনপ্রশাসন বা সামাজিক কাজে প্রাসঙ্গিক কাজের অভিজ্ঞতার সাথে আবেদনকারীদের প্রয়োজন বা পছন্দ থাকতে পারেএমবিএ প্রোগ্রামের জন্য প্রায়ই ২ থেকে ৫ বছর বছরের পেশাদার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়।

লেটার অফ রেকমেন্ডেশন কানাডায় বেশিরভাগ মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য দুই থেকে তিনটা চিঠির প্রয়োজন হয়। এগুলি এমন অধ্যাপক বা পেশাদারদের হতে হবে যারা আপনার একাডেমিক দক্ষতা, গবেষণার, সম্ভাবনা বা পেশাদার দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারে।

ব্যক্তিগত বিবৃতি এসওপি আপনার আবেদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আপনার প্রোগ্রামটি অনুসরণ করার জন্য অনুপ্রেরণা, আপনার একাডেমিক এবং পেশাদার পটভূমি আপনার ক্যারিয়ারের লক্ষ্য এবং কেন আপনি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী তা উল্লেখ করতে হবে।

গবেষণা প্রস্তাব আপনি যদি একটি গবেষণা ভিত্তিক মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করেন যেমন- বিজ্ঞানের মাস্টার এক্ষেত্রে একই গবেষণার প্রস্তাব জমা দিতে হবে।

জীবন বৃত্তান্ত একটি সিভি বা জীবন বৃত্তান্ত প্রায়ই আবেদনের অংশ হিসাবে প্রয়োজন হয়ে থাকে। এটিতে আপনার একাডেমিক ইতিহাস, কাজের অভিজ্ঞতা, গবেষণা প্রকল্প, প্রকাশনা এবং যেকোনো প্রাসঙ্গিক দক্ষতা বা প্রশংসাপত্রের বিবরণ দিতে পারেন।

আবেদন প্রক্রিয়া

অনলাইনে আবেদন বেশিরভাগ কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন আবেদন গ্রহণ করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনাকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। আপনার ব্যক্তিগত বিবরণ, একাডেমিক ইতিহাস পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করে আবেদন করতে হবে।

আর্থিক প্রয়োজনীয়তা এটি স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন করার সময় আপনাকে প্রমাণ দিতে হবে যে আপনার কাছে টিউশন এবং ছাত্রজীবনের  ব্যায়ভার  কাভার করার মত অর্থ অর্জিত রয়েছে। এতে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্কলারশিপ লেটার বা স্পন্সর থেকে ফান্ডিং এর প্রমাণ অন্তর্ভুক্ত করে দিতে পারেন।

স্টাডি পারবিট এবং ভিসা আপনি যদি ভর্তি প্রস্তাব পেয়ে থাকেন তাহলে ক্যানাডিয়ান স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারেন। এজন্য আপনার যোগ্যতার পত্র, তহবিলের প্রমাণ, একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং মেডিকেল ও পুলিশি ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয়।

চূড়ান্ত বিবেচনা প্রতিটি প্রোগ্রামের নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড থাকতে পারে তাই আপনার আগ্রহের প্রোগ্রামের প্রয়োজনীয়তা গুলি পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এভাবে যোগ্যতার প্রয়োজনতা গুলি পূরণ করে এবং একটি শক্তিশালী আবেদন প্রস্তুত করে আপনি কানাডায় একটি মাস্টার্স প্রোগ্রামে গৃহীত হওয়ার জন্য আবেদন করে আপনার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারেন।

আরো পড়ুন: টাকা ইনকাম করার ১১টি সহজ উপায় বাংলাদেশে-২০২৪

কানাডায় বিনামূল্যে পড়াশোনা করার উপায়

বিনামূল্যে পড়াশোনা করার উপায় অনেক রয়েছে কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে খরচ কমানো বা এমন কি আপনার শিক্ষাকে সম্পূর্ণ অর্জন করার বিভিন্ন উপায় ও রয়েছে নিচে তা আলোচনা করা হলো।

বৃত্তি বা অনুদান অনেক কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান একাডেমিক এর শ্রেষ্ঠত্বের উপর ভিত্তি করে  বৃত্তি বা অনুদান প্রদান করে থাকে। যোগ্যতা অর্জন করতে হলে আপনার সাধারণত প্রয়োজন- 

উচ্চ একাডেমিক গ্রেড জিপিএ ৩.৫ আউট অফ ৪.০

সুপারিশের শক্তিশালী চিঠি।

ব্যক্তিগত প্রবন্ধের একটি আকর্ষণ বিবৃতি।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে এস এ টি, জি আর ই বা জি এম এ টি এর মত পরীক্ষার স্কোর প্রয়োজন হবে।

প্রয়োজন ভিত্তিক বৃত্তি আর্থিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে কিছু বৃত্তি দেওয়া হয়। তারা নিম্নোক্ত যোগ্যতা প্রয়োজন হতে পারে।

  • আয়ের বিবরণী এবং অন্যান্য আর্থিক নতি সহকারে আর্থিক প্রয়োজনের প্রমাণ।
  • একটি কঠিন একাডেমিক রেকর্ড।

সরকারি বৃত্তি ক্যানাডিয়ান সরকার সেই সাথে প্রাদেশিক সরকার গুলি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য বৃত্তি বা অনুদান প্রদান করে থাকে যেমন-

  • ভ্যানিয়ার কানাডা স্নাতক বৃত্তি এক্ষেত্রে অসামান্য একাডেমিক কৃতিত্ব এবং গবেষণার সম্ভাবনা সহ ডক্টরাল ডিগ্রি দিয়ে থাকে শিক্ষার্থীদের জন্য।
  • যোগ্যতার জন্য সাধারণত উচ্চ একাডেমিক পারফরম্যান্স এবং কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গবেষণা প্রস্তাবের প্রয়োজন হয়।
  • কানাডা আসিয়ান স্কলারশিপ এটি শুধুমাত্র আসিয়ান সদস্য দেশগুলির জন্য ছাত্রদের বিনামূল্যে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্পূর্ণ ফ্রি বৃত্তি

এক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি অফ টরেন্ট লেস্টার বি. পেয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ এটি চার বছরের জন্য টিউশন, বই, আনুষাঙ্গিক ফি এবং সম্পূর্ণ আবাসিক সহায়তা দিয়ে থাকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য। 

ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট স্কলারশিপ এই বিশ্ববিদ্যালয় টি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের ফুল টিউশন স্কলারশিপ দিয়ে থাকে।

ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া international leader of award এই ইউনিভার্সিটি টিউশন এবং জীবনযাত্রার সম্পন্ন খরচ বহন করে থাকে।

প্রাদেশিক ও টেরিটোরিয়াল স্কলারশিপ

এক্ষেত্রে প্রতিটি কানাডিয়ান প্রদেশ আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য নির্দিষ্ট বৃত্তি প্রদান করে থাকে। যেমন-

অন্তারীয় গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ এক্ষেত্রে মাস্টার্স ও ডক্টর ডিগ্রি প্রদানের ক্ষেত্রে ছাত্রদের ফ্রি অধ্যায়ন করিয়ে থাকে।

কুইবেক মেরিট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম এটি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য ফ্রি অধ্যায়ন করিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন ভালো অবস্থানে থাকতে হবে এবং ভালো ফরাসি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।

বহিরাগত বৃত্তি

কমনওয়েলথ বৃত্তি কমনওয়েল দেশগুলির শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এছাড়া রটারি ইন্টারন্যাশনাল, ফুল ব্রাইট এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রয়োজন।

বিনিময় প্রোগ্রাম

কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানের সাথে বিনিময় চুক্তি রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি না দিয়ে একটি সেমিস্টার বা এক বছরের জন্য কানাডায় পড়াশোনা অনুমতি দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অংশীদার বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্তি, ভালো একাডেমিক অবস্থান এবং ভাষায় দক্ষতার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন: বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করা

কিছু ক্যানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। যদিও কানাডায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অধ্যয়ন করা বিরল। এই পথগুলি উল্লেখযোগ্য ভাবে আপনার খরচ কমাতে এবং কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে টিউশন ফি মউকুব করে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিতে পারে।

শেষ কথা

কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলি তাদের একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব, গবেষণার সুযোগ এবং সহায়ক শিক্ষার পরিবেশের জন্য পরিচিত। তাই কানাডা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাগত জানাচ্ছে। একটি বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা এবং নীতি যা প্রায়শই পোস্ট গ্রাজুয়েশন ওয়ার্ক পারমিট এর মত প্রোগ্রাম

গুলির মাধ্যমে অধ্যয়ন করার সময় কাজ করা এবং স্নাতকের পরে থাকার সময় সহজ করে তুলতে সাহায্য করে থাকে। আপনি যদি কানাডার কথা বিবেচনা করেন তবে এর পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথাও বিবেচনায় আনতে হবে। যেমন- নিরাপদ, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্ত সমাজ রয়েছে কানাডাতে। আর্থিকভাবে পরিকল্পনাও করা যেতে পারে।

কেননা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি অনেক বেশি হতে পারে। যদিও সেখানে বৃত্তি এবং কাজের সুযোগ রয়েছে অনেক। সামগ্রিকভাবে যারা বাইরের দেশে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য কানাডা একটি দুর্দান্ত পছন্দের দেশ হতে পারে। তাই আমার মতামত আপনি যদি বাইরের কোন দেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান তবে অবশ্যই কানাডাকে প্রথম চয়েস করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url