প্রতিদিন ঘি খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা ১১টি
প্রতিদিন ঘি খাওয়ার বিষয়টি আমাদের দেশে অনেক আগ থেকেই প্রচলিত আছে। এক্ষেত্রে অনেকেই ঘি খেতে পছন্দ করেনা, আবার এরই মধ্যে অনেকেই আগ্রহ করে ঘি খেয়ে থাকেন। যারা ঘি খেতে চান না, তারা মনে করেন ঘি খেলে শরীরের ক্ষতি হবে, তবে এই ধারণাটি ভুল,কারন এর মধ্যে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা অন্য কোন খাবারের মধ্যে নেই।
আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন যে আগের মানুষগুলো নিজের প্রস্তুতকৃত ঘি নিয়মিত খেতেন বলে তাদের শরীরে তেমন কোন রোগ ব্যাধি হতো না। ঘি আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী তা জানলে আপনি অবাক হতে বাধ্য। সঠিক মাত্রাই যদি সঠিক সময়ে আপনি ঘি খান তা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
পেজ সূচিপত্র: প্রতিদিন ঘি খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা ১১টি
- যে ধরনের প্রাণীর দুধের তৈরি ঘি ভালো হয়
- ঘি মানব দেহের জন্য যেভাবে উপকারে আসে
- প্রতিদিন ঘি খেলে হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়
- ঘি খেলে যেভাবে স্মৃতিশক্তি বা ব্রেন বৃদ্ধি পায়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঘি এর প্রভাব
- সুস্বাদু খাবার তৈরিতে ঘি এর ব্যবহার
- প্রতিদিন ঘি খেলে হার্ট ভালো থাকে
- হজম ক্ষমতা বাড়াতে ঘি এর প্রভাব
- ঘি ব্যবহারে পোড়া ঘা যেভাবে ভালো হয়
- চুলের এবং মাথার স্কিনের যত্নে ঘি এর ব্যবহার
- নিয়মিত ঘি খেলে ওজন কমে যায়
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ঘি এর প্রভাব
- শেষ কথা
যে ধরনের প্রাণীর দুধের তৈরি ঘি ভালো হয়
সবচেয়ে ভালো ও পুষ্টিগুণে ভরপুর কি হচ্ছে গাভী থেকে প্রাপ্ত দুধ থেকে তৈরি ঘি। কারণ গাভীর ঘি আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল কে বৃদ্ধি করে না বরং অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বৃদ্ধি প্রতিরোধে সাহায্য করে। গাভীর ঘি তে ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকার জন্য আমাদের পেটের মধ্যে থাকা বিভিন্ন দূষিত পদার্থকে বের করে দিতে সাহায্য করে, যার ফলে পেটের সকল ধরনের সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। গাভীর তৈরি ঘি তে পাচন ক্ষমতা অনেক বেশি। যার কারণে পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ঘি মানব দেহের জন্য যেভাবে উপকারে আসে
ঘি আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে তবে ঘি এর মধ্যে যে উপাদান গুলো রয়েছে
তা জানা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেয় ঘি এর মধ্যে কি কি উপাদান থাকে। ঘি তে রয়েছেঃ
- Mono unsaturated omega3 Fatty acid
- Linolice acid ( poly unsaturated fatty acid)
- Buteric acid এ ছাড়া থাকে
- ভিটামিন- এ
- ভিটামিন-ই
- ভিটামিন-ডি
- ভিটামিন-কে
- ক্যালসিয়াম
- কার্বোহাইডেট
- সুগার
- ফসফরাস
- সোডিয়াম
- প্রোটিন এবং রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের পাওয়ারফুল
- এন্টিঅক্সিডেন্ট
ঘি এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান বা পুষ্টিগন থাকার কারণে, অনেক মানুষ প্রতিদিন
বা নিয়মিত ঘি খাওয়ার জন্য অনেক রোগ থেকে পুরোপুরি মুক্তি লাভ পেয়ে থাকেন।
অনেকেই ঘি খেতে ভয় পান কেননা ঘি এর কারণে শরীর মোটা হয় এবং কোলেস্টেরলের পরিমাণ
বৃদ্ধি পায়। এছাড়া কোন খারাপ প্রভাব আমাদের শরীরে পড়ে কিনা এ নিয়েও সন্দেহ
প্রকাশ করেন। তবে এটি যদি সঠিক সময়ে এবং সঠিক মাত্রায় সেবন করা হয় তাহলে
আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আসুন ঘি খেলে আমাদের শরীরের কি কি উপকার হয় তা
এ পোষ্টে বর্ণনা করে দেয়া হলো।
প্রতিদিন ঘি খেলে হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়
ঘি এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন k2 এবং ক্যালসিয়াম থাকার কারণে এই ভিটামিন k2, ক্যালসিয়াম কে দ্রুত শোষণ করে। আপনি সারাদিন যে খাবার খান এতে যে ক্যালসিয়াম শরীরে প্রবেশ করে এই k2 তা দ্রুত শোষণ করে থাকে এবং আমাদের হাড়কে মজবুত ও সুস্থ করে তোলে। বডির আটারির মধ্যে যে ক্যালসিয়াম জমা থাকে তা বেশি হলে আর্টারি ব্লক করে দিতে পারে। এই ভিটামিন k2 সেই ক্যালসিয়াম কে হাড়ের মধ্যে ট্রান্সফার করে দেয়। এতে আর্টারি ভালো থাকে এবং হাড় ও মজবুত হয়।
ঘি খেলে যেভাবে স্মৃতিশক্তি বা ব্রেন বৃদ্ধি পায়
এটা প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত ঘি খাওয়া ব্যক্তির চিন্তাভাবনার ধারণা অন্য
যেকোনো ব্যক্তি থেকে আলাদা। ঘি খাওয়ার কারণে মানুষের চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটে,
সেইসাথে বিশেষ করে বাচ্চাদের যদি নিয়মিত ঘি খাওয়ানো হয় তবে তাদের স্মৃতিশক্তি
বৃদ্ধি পায়, অন্য যেকোনো ঘি না খাওয়া বাচ্চাদের চাইতে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঘি এর প্রভাব
ঘি এর মধ্যে এমন কিছু এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাল এজেন্ট রয়েছে যা আমাদের শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া এবং খারাপ ভাইরাসকে মেরে ফেলে। এতে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে মানুষ শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পায়।
এছাড়া রয়েছে Omega3 Fatty acid, Linolice acid বিউটরিক এসিডের মত
বিভিন্ন প্রকারের আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। এই গুলো বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আরো রয়েছে Active Antry Inflamatory
প্রোপার্টি যে কারণে শরীরকে বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে।
আরো পড়ুন: ব্যাংক সম্পর্কিত সাধারন জ্ঞান ১০ টি বিষয়ে
সুস্বাদু খাবার তৈরিতে ঘি এর ব্যবহার
ঘি, সবজি পাউরুটি এবং ডালের মধ্যে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া গরম ভাতে ও ঘি
খাওয়া খুবই ভালো। এছাড়া খাবার তৈরি করার সময় তেলের পরিবর্তে আপনি ঘি ব্যবহার
করতে পারেন। পাশাপাশি পোলাও, বিরিয়ানি ভর্তাতেও ঘি ব্যবহার করতে পারেন। ঘিয়ে
পুষ্টি উপাদানে ভরপুর তাই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ঘি ব্যবহার হয়ে
থাকে।
প্রতিদিন ঘি খেলে হার্ট ভালো থাকে
আমরা জানি হার্ট দুর্বল হয়ে গেলে যেকোনো সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ঘি
তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পাওয়ারফুল এন্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
আমাদের হার্টের যে আর্টারি বা ব্লাড ভেসেলগুলো রয়েছে সেগুলোকে অক্সিজেন সাপ্লায়ে
কেউ যেন বাধা প্রদান করতে না পারে, তা থেকে হার্টকে সুরক্ষিত রাখে।
হজম ক্ষমতা বাড়াতে ঘি এর প্রভাব
ঘি এর মধ্যে বিউটারিক এসিড নামে এক ধরনের ফ্যাটি এসিড রয়েছে। এই
ফ্যাটি এসিড আমাদের পাকস্থলীর গাটের মধ্যে প্রোবায়োটিক বা ভালো
ব্যাকটেরিয়া তৈরিতে সাহায্য করে। যে ব্যাকটেরিয়া আমাদের সব ধরনের খাবার হজম
করতে সাহায্য করে এবং ঘি হলো লাক্জেটিভ ইন ন্যাচার যার কারনে কি পাকস্থলীর গেটের
মধ্যে একটা লাক্জেটিভ ইফেক্ট দিয়ে থাকে যার ফলশ্রুতিতে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার
সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়
ঘি ব্যবহারে পোড়া ঘা যেভাবে ভালো হয়
ভি এর নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে এর মধ্যে একটি হচ্ছে ট্রপিক্যাল ব্যবহার যেমন পোড়া
ঘায়ে ঘি ব্যবহার করলে ঘা দ্রুত সরে ওঠে। এ বিষয়টা অনেকেরই জানা নেই তবে ঘি
ব্যবহারের নিয়ম জানা দরকার। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পোড়া ঘায়ে ঘি এর হালকা
প্রলেপ দিয়ে দিতে হবে এবং সকালে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দিলে ঘা ভালো হয়ে
যায়।
চুলের এবং মাথার স্কিনের যত্নে ঘি এর ব্যবহার
চুল পড়া রোধে ঘি এর ব্যবহার যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। চুলের যত্নে ঘরোয়া ভাবে
সাতটি উপায়ে চুল পড়া রোধ করা যায়।
১। খুশকি দূর করতে ঘি এর ব্যবহারঃ কাজুবাদামের তেলের সাথে ঘি মিশিয়ে
মাথার তালুতে দিয়ে মেসেজ করুন এবং ১৫ মিনিট পরে গোলাপজল দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন এভাবে খুশকি দূর করা যায়।
২। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর করতে ঘি এর ব্যবহারঃ মাথার তালুতে
ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সপ্তাহে দুইদিন পুরো মাথায় ঘি দিয়ে ভালোভাবে মেসেজ করতে
হবে এতে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর হয়ে যায়।
৩। চুল ফেটে যাওয়া রোধ করতে ঘি এর ব্যবহারঃ চুলের আগা ফেটে গেলে তিন
চামচ ঘি নিয়ে আপনার চুলের আগায় লাগিয়ে রাখুন। এর ১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে করে চুলের আগা ফেটে যাওয়া সমস্যা দূর হবে।
৪। নতুন চুল গজাতে ঘির ব্যবহারঃ মাসে দুইবার মাথায় ঘি লাগিয়ে মেসেজ করতে হবে ১৫ মিনিট পর আমলকি ও পেঁয়াজের রস দিয়ে চুলটাকে মেসেজ করে ধুয়ে ফেলুন এতে করে নতুন চুল গজাতে শুরু করবে।
৫। চুল পড়া রোধে ঘি এর ব্যবহারঃ প্রথমে একটা বাটিতে চার থেকে পাঁচ চামচ ঘি গরম করে নিন তারপর ৪ থেকে ৫ গ্রাম কাজুবাদামের গুড়া এবং দুই বা তিন চামচ কাজুবাদামের তেল দিয়ে সবগুলো মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করুন এবং হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে আপনার চুল পড়া রোধ হবে এবং গোড়া মজবুত হবে।
৬। চুল কালো করতে ঘি এর ব্যবহারঃ দুই বা তিন চামচ লেবুর রস একটি গ্লাসে নিয়ে, সাথে দুই বা তিন চামচ ঘি নিয়ে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এখন এই প্যাকটি মাথার চুলে লাগিয়ে নিন এতে চুল চকচকে কালো এবং সিল্কি হবে।
৭। প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের ন্যায় ঘি এর ব্যবহারঃ একটি বাটিতে দুই চামচ ঘি নিয়ে এর সাথে দুই চামচ অলিবয়েল নিন এবং মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এবার এটা চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা একটা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার এর মত কাজ করবে এবং আপনার চুল মসৃণ ও সিল্কি হবে।
নিয়মিত ঘি খেলে ওজন কমে যায়
দেখুন আমরা প্রায় সবাই জানি কি খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় কথাটা কিছুটা সত্যি হলেও
প্রত্যেকটা বিষয়ের একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ও তাই, আপনি যদি সঠিক সময়
সঠিক নিয়মে ঘি সেবন করেন, এক্ষেত্রে আপনার ওজন বাড়াবে না বরং ওজন কমাতে
সাহায্য করবে। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম এক গ্লাস পানির সাথে যদি এক চা চামচ ঘি
খান তবে তা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ওজন তখনই বৃদ্ধি পাবে যখন প্রয়োজনের
চেয়ে বেশি মাত্রায় ঘি খাবেন।
আরো পড়ুন: ফুটপাতে ব্যবসা করার ১০ টি কার্যকর আইডিয়া
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ঘি এর প্রভাব
ঘি বয়সের ছাপ কমিয়ে আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই ঘি খাওয়ার পাশাপাশি যদি আপনি সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন, তবে আপনার ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল হবে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য ঘি নিয়ে মুখের ত্বকে পাঁচ মিনিট মেসেজ করুন এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবেই নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর করে আপনার ত্বককে অধিকতার উজ্জ্বল করে তুলবে।
এছাড়া প্রতিদিন গোসলের সময় পুরো শরীর ঘি দিয়ে মেসেজ করে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে আপনার শরীরের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ঘি দিয়ে মেসেজ করলে ত্বকের বলিরেখ ও কুঁচকানো ভাব দূর হয়ে যায়।
ঘি এর সাথে হালকা নারিকেলের তেল মিশিয়ে মেসেজ করুন এতে করে আপনার ত্বক নরম
ও মসৃন হবে। পাশাপাশি ঘুমানোর আগে ঠোঁটে ঘি দিয়ে মেসেজ করুন এক সপ্তাহের মধ্যে
ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয়ে যাবে।
শেষ কথা
মানুষের প্রয়োজনে ঘি এর ব্যবহার অপরিহার্য। যদি নিয়মিত ঘি ব্যবহার করা হয়
সেক্ষেত্রে মানুষ বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবে। এবং মানুষের
জীবনে ঘি এর ব্যবহারের কথা বলে শেষ করা যাবে না তাই যতটুকু পারেন নিয়ম মেনে ঘি
সেবন করুন। একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘি নিজের বাড়িতে তৈরিকৃত
হয়। নিয়মিত ঘি খান সুস্থ থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url