সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার গুরুত্বপূর্ন ১৫টি উপকারিতা
সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা জানতে হলে অবশ্যই এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। এই পোস্টে আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খাবার নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে বাদাম। ভাবছেন এতকিছু থাকতে বাদাম কেন? আমেরিকায় একটি গবেষণায় দেখা গেছে তারা এক হাজার খাবারের তালিকা করে
এর মধ্যে থেকে ১০০ টা খাবারকে শ্রেষ্ঠ খাবার বলে আখ্যায়িত করেন। এই 100 খাবারের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে বাদাম। কেননা আখরোট ও কাঠবাদামে থাকে এসেনশিয়াল ফ্যাটিয়ে এসিড বা অমেগা থ্রি যাকে ইঞ্জিন ওয়েল বলা হয়। যানবাহন চালাতে যেমন তেল লাগে, মবেল লাগে ঠিক তেমনি মানুষের দেহের জন্যও তেল লাগে আর এই তেল হচ্ছে বাদাম।
পেজ সূচিপত্র: সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি উপকারিতা
- আমিষের অভাব পূরণে বাদামের ব্যবহার
- দেহের রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে বাদামের ভূমিকা
- হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক এবং পেশীশক্তি সবল রাখতে বাদামের ব্যবহার
- ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণের বাদামের ব্যবহার
- রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে বাদামের ভূমিকা
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বাদামের ভূমিকা
- ক্যান্সার প্রতিহত করতে বাদামের ব্যবহার
- জাঙ্ক ফুডের ক্ষতিকর দিক কে প্রতিহত করতে বাদাম
- রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাধা প্রতিহত করতে বাদাম
- গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে বাদামের ভূমিকা
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
- ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
- হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
- রক্তস্বল্পতা দূর করতে বাদামের ভূমিকা
- হাঁড় মজবুত করতে বাদামের ভূমিকা
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বাদামের ভূমিকা
- শেষ কথা
ভূমিকা: আমাদের দৈনিক জীবনযাত্রার খাদ্য তালিকার মধ্যে প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত, মাছ, ডাল, রুটি ইত্যাদি। তবে আমরা যদি এই খাদ্য তালিকার মধ্যে আরও একটি খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, তাহলে আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী কিছুটা হলেও তা করুন হবে। সেই খাদ্যটি হচ্ছে বাদাম। বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বা আরো অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বাদাম পাওয়া যায় যেমন-
কাঠবাদামআখরোটকাজুবাদামপেস্তা বাদামচিনা বাদামপাইন নাটব্রাজিল নাটহ্যাজল নাটপিকন্যাসচেস্ট নাটবাদামের তালিকায় থাকা নিচের চারটি বাদাম আমাদের দেশে সহজলভ্য না। এগুলো চাইলেও আমরা হাতের নাগালে পাবোনা। তবে অন্য বাদামগুলো আমরা সহজেই হাতের নাগালে পেয়ে থাকি এবং আমরা চাইলেই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বাদাম অন্তর্ভুক্ত করে নিয়মিত সেবন করতে পারি। কেননা বাদামে রয়েছে অতি মূল্যবান উপাদান যা আমাদের হাতের নাগালেই পেয়ে থাকি যেমন বাদামে রয়েছে-
- আইরন
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
- ক্যালসিয়াম
- জিংক
- কপার
- সেলিনিয়াম (মিনারেল)
- প্রোটিন
- ফাইবার
- রাইবো ফ্লেবিং
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন বি
- থায়ামিন
- মিয়াসিন
- ফলেট
আমিষের অভাব পূরণে বাদামের ব্যবহার
আমাদের শরীরের জন্য আমিষের পরিমাণ কতটুকু প্রয়োজন তা আমরা প্রায় কেউই জানিনা। প্রতিদিনের আমিষের চাহিদা পূরণে আমরা মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি খেয়ে থাকি। এর সাথে যদি আরও একটি খাদ্য যোগ করা যায় তবে প্রয়োজনমতো আমিষের অভাব পূরণ হবার সম্ভাবনা থাকে। সেটি হল বাদাম। বাদামে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকার কারণে আমাদের শরীরের চাহিদা মোতাবেক আমিষের অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আপনারা জানেন যে বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ থাকে এতে আমাইনো এসিড থাকে যা আমাদের শরীরের কোষের বৃদ্ধিতে দারুণভাবে সহায়তা করে। একথাই বলতে গেলে বাদাম গ্রোথ হরমোন হিসাবে কাজ করে। এই আমাইনো এসিড আর্জেনিন নামে পরিচিত যা ধমনীর ভেতরের দেয়ালকে সরল ও নমনীয় করতে সাহায্য করে এতে করে শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রবাহ খুব সুন্দর ভাবে সংঘটিত হয়।
বিশেষ করে বাচ্চাদের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাদামের ভূমিকা অপরিসীম এছাড়া এর মধ্যে
রয়েছে দুধের গুনাগুন যারা দুধ খেতে অনিহা প্রকাশ করে তাদের উচিত নিয়মিত
বাদাম খাওয়া।
দেহের রোগপ্রতিরোধ বাড়াতে বাদামের ভূমিকা
বাদামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকার কারণে শীতকালে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যেমন সর্দি কাশির মতো সিজিনালি রোগগুলো থেকে বাদাম আপনাকে রক্ষা করবে। আর নিয়মিত বাদাম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীরের ভিতরের ইমনোসিস্টেম ভালো থাকে এমনকি করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাসকেও প্রতিহত করে। পাশাপাশি শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং এন্টি টক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।
হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক এবং পেশীশক্তি সবল রাখতে বাদামের ব্যবহার
বাদামে প্রচুর পরিমাণে কোএনজাইম Q10 নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল
থাকার কারণে যা হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ জনিত অনেক সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা
করবে। এছাড়া বাদামে রয়েছে ক্রিপটোফেন নামক একটি এজেন্ট যা ভালো
ক্যালসিয়ামের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এতে অনিদ্রা, হাত-পা ফাঁপা, শারীরিক
দুর্বলতা, মানসিক বিষন্নতা থেকে মুক্ত রাখবে। এটা আপনার ব্রেনে কাজ করে এবং
আপনার ব্রেন টাকে সব সময় হালকা রাখবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন বেশি মুভমেন্ট
করলে পেশিতে টান লাগে আর এই পেশিশক্তি বাড়াতে বাদামের ভূমিকা অপরিসীম।
ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে বাদামের ব্যবহার
একটি জরিপে দেখা গেছে আমাদের দেশের প্রতি তিনজনের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর প্রধান কারণ হলো অনিয়মিত ভাবে খাবার খাওয়া। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বাদাম রাখবেন। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাদাম ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে, অগ্নাশয় এর সেল গুলো পুনরায় তৈরি করে
ইনসুলিন ক্ষরণে সাহায্য করে। বাদামে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ নামক একটি উপাদান এই খনিজ উপাদানটি ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। এই ম্যাঙ্গানিজ ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেটকে মেটাবলিজম করে কোষে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। এবং ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে ২১ শতাংশ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে বাদাম।
রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে বাদামে ভূমিকা
আপনারা জানেন রক্তে বিভিন্ন ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। যেমন ট্রাইগ্লিসারাইড, ব্যাড কোলেস্টেরল, গুড কোলেস্টেরল। তবে ব্যাট কোলেস্টেরল গুলো মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। এতে মানুষের মৃত্যু ঝুঁকিও থেকে থাকে। সেই বাদাম রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। বাদাম হচ্ছে
আনসাসুরেটেড ফ্যাট তাই যদি রক্তে মনোসাচুসুরেটেড এবং পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করে। এই বাদামে রয়েছে ওয়েলিক এসিড যা রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল কে বাড়াতে সাহায্য করে। এই ভালো কোলেস্টেরল আপনার হার্টের কার্যক্ষমতা কে বাড়াতে সাহায্য করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বাদামের ভূমিকা
আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন অনেক মানুষ আছেন যাদের অল্প বয়সেই বিভিন্ন কারণে
বয়স্ক মনে হয়। এর প্রথম কারণ হচ্ছে স্কিন ডিজিজ বা ত্বকের সমস্যা জনিত কারণে
কিছুটা বয়সের ছাপ পড়ে যায়। বাদমে উপস্থিত মনোসাচুরেটেড এসিড যা ত্বককে
সবসময় মলিন রাখে অর্থাৎ ত্বককে রাখবে মসৃণ এবং উজ্জ্বল। এছাড়া বাদামে ভিটামিন
ই থাকার কারণে ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। বাদাম আপনাকে অল্প বয়সে
বয়স্ক এর মত লাগা থেকে রক্ষা করবে। মনে এনে দিবে অনাবিল আনন্দ।
ক্যান্সার প্রতিহত করতে বাদামের ব্যবহার
আমাদের দেশের অনেক মানুষ অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর
দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এটা কিছুটা বংশ পরস্পরাই হলেও বিভিন্ন খাদ্যাভাসের বা
অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে হয়ে থাকে। বাদামের প্রচুর পরিমাণে ফাইটুস্টেরল
নামে এক ধরনের কোলেস্টেরল রয়েছে। এই এনজাইমটি ক্যান্সার প্রতিরোধে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
জাঙ্ক ফুডের ক্ষতিকর দিক কে প্রতিহত করতে বাদাম
পরিমিত পরিমান জ্যাঙ্ক ফুড খাবার পরেও আপনি সুস্থ থাকতে পারেন। যদি খাদ্য
তালিকায় পরিমিত পরিমাণ বাদাম রাখেন। যেমন বিরিয়ানি, ফাস্টফুড, তেলেভাজা
খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার এ ধরনের খাবার যখন আপনি খান সাথে সাথে শরীরের রক্ত
নালী পাইপের মত শক্ত হয়ে যায়। তখনই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হবার মতো
সম্ভাবনা ঘটে। যদি নিয়মিত বাদাম খান তবে এই রক্তনালি নমনীয় থাকে আর বড় ধরনের
দুর্ঘটনা থেকে আমাদের রক্ষা করে।
আরো পড়ুন: ব্যাংক সম্পর্কিত সাধারন জ্ঞান ১০ টি বিষয়ে
রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাধা প্রতিহত করতে বাদাম
আমরা সবাই জানি রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধলে একটি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা
যায়। তা হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। এই উচ্চ রক্তচাপ মানুষের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। বাদামে রয়েছে আর্জেনিন
নামক একটি উপাদান। যা রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে। এই বাদাম
রক্তকে তরল রাখতে সাহায্য করে, ফলে উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণে হার্ট অ্যাটাক বা
স্ট্রোক হওয়া অনেকাংশেই কমিয়ে আনে।
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে বাদামের ভূমিকা
বাদাম আমাদের কি পরিমান উপকারে আসে তার আরেকটি জলজ্যান্ত প্রমান হচ্ছে গর্ভস্থ
শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে বাদাম অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে। বাদামে ভিটামিন বি
কমপ্লেক্স থাকার জন্য গর্ভের বাচ্চাদের মস্তিষ্ক গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। সুতরাং গর্ভবতীদের অবশ্যই নিয়মিত বাদাম খাওয়া উচিত। এতে করে
নিজে এবং গর্ভস্থ শিশু দুজনেই উপকৃত হবেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
শক্তি উৎপন্নর জন্য ক্যালরির প্রয়োজন হয়। আমরা প্রতিদিনের চাহিদা মোতাবেক
ক্যালরি সেবন করতে পারি না। কোন খাবারে কতটুকু ক্যালোরি আছে তাও আমরা জানিনা।
যার কারনে শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। বাদামে
খুব কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে এত করে প্রতিদিনের চাহিদা মোতাবেক ক্যালরি সরবরাহ
করতে না পারায় শরীরে জমে থাকা ক্যালোরিগুলো গলে গিয়ে শক্তি উৎপন্ন করে।
এভাবেই যদি নিয়মিত বাদাম খাওয়া হয় এবং তা শরীর থেকে জমানো ক্যালরি দিয়ে
শক্তির উৎপন্ন করতে থাকে যার ফলে শরীরের ওজন আস্তে আস্তে কমতে থাকে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
ব্লাড সুগার হচ্ছে রক্তের গ্লোকোজের বা সুগারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। গ্লোকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। অনেকের মনে প্রশ্ন আসে বাদাম খেলে ব্লাড সুগার বাড়বে না তো ? প্রথমেই বলে রাখি বাদাম খেলে আপনার রক্তের সুগার বাড়বে না। কেননা বাদামের জিআই অর্থাৎ গ্লাইসেমিকস ইনডেক্স খুবই কম।
যার অর্ধেকের বেশি ফ্যাট আর ১০% এর উপরে ফাইবার থাকে। ফলে আপনি বাদাম খেতে থাকলে আপনার রক্তের সুগার খুবই ধীরে ধীরে বাড়বে। তবে প্রতিটা খাবারের ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়।যদি আপনি প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ বাদাম খান সেক্ষেত্রে আপনার ব্লাডে গ্লোকোজের পরিমাণ বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আরেকটি মজার বিষয় হল
একটি গবেষণায় দেখে গেছে, যাদের টাইপ-2 ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে বাদাম মেডিসিনের মত কাজ করবে। এক্ষেত্রে বাদামটি টাইপ-2 ডায়াবেটিস কে অনেক নিয়ন্ত্রণে রাখে। এখন প্রশ্ন হল আপনি কোন বাদাম খাবেন কাঠবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, চিনা বাদাম এগুলো আপনি খেতে পারেন টাইপ-1 এবং টাইপ-2 ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে।
হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
খারাপ খাদ্যাভাসের কারণে রক্তের মধ্যে যে লিপিড বা চর্বি বস্তুগুলো আছে, তার পরিমাণ হের ফের হয়ে যায়। যেমন টাই গ্লিসারাইড কোলেস্টেরলে বিশেষ করে এলডিএল কোলেস্টেরল থাকে। এই এলডিএল কোলেস্টেরল কে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়। এটা বেড়ে গেলে আমাদের ধমনীর মধ্যে প্ল্যাগ তৈরি হয় বা রক্তনালী সরু হয়ে যায়।
এতে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে যার ফলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক এর মত মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই নিয়মিত বাদাম খেলে ধমনিতে প্ল্যাগ তৈরি হতে দেয় না। এতে হৃদরোগ হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে বাদামের ভূমিকা
আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা রক্তস্বল্পতায় এখনো ভোগে। বিশেষ করে প্রসূতি
মা এই রক্তস্বল্পতার কারণে আমাদের দেশের অনেক প্রসূতি মা অকালে মৃত্যুর দিকে
ধাবিত হয়। এই বাদামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা
তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এই বাদাম রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা
বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এভাবে নিয়মিত বাদাম খাওয়ার
মাধ্যমে এই রক্তস্বল্পতা জড়িত রোগ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।
হাঁড় মজবুত করতে বাদামের ভূমিকা
আপনারা জানেন হাড়ের মূল উপাদান হচ্ছে ক্যালসিয়াম এই ক্যালসিয়ামের অভাব হলে হারে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন অস্টিও আর্থ্রাইটিস, অস্ট্রিওপোরোসির। এছাড়া হার অনেক ভঙ্গুর হয়ে যায়। এতে করে অল্পতেই হার ভেঙ্গে যায়। এবং অল্প বয়সেই অনেকেই ক্যালসিয়ামের অভাবে বার্ধক্য জীবন যাপন করতে দেখা যায়। বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এই ক্যালসিয়াম হারকে মজবুত রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি নিয়মিত পরিমিত পরিমাণ বাদাম খান তবে এই অস্টিও আর্থ্রাইটিস, অস্ট্রিওপোরোসির এই ধরনের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বাদামের ভূমিকা
আমরা আমাদের জীবদ্দশায় একটি রোগের সাথে অতপ্রোত ভাবে প্রায় সবাই কমবেশি জড়িত। সেটি হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। এই সমস্যাটি আমাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলে। আমরা বিভিন্নভাবে এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে থাকি। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এমন একটি উপাদান যোগ করুন যা আপনাকে এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত করবে। আর এই খাদ্যটি হচ্ছে বাদাম। বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে আমাদের মলটাকে নরম করে দেয়। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমরা সহজেই মুক্তি পাই।
শেষ কথা
বাদাম এমন একটি উপকারী খাদ্য যার কোন ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে। তাই প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় যদি বাদাম যোগ করা হয়, এতে করে আপনার শরীর ও মন অনেক ভালো থাকবে। বাদামে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যা আপনার শরীরের জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। তাই আসুন আপনি আমি আমাদের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণ বাদাম যোগ করি এবং প্রতিদিনের দৈহিক চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের উপাদান এই বাদাম থেকেই নিয়ে থাকি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url