দাঁতের রোগ ও প্রতিকার- দাঁত ভালো রাখার ৬টি উপায়

দাঁতের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। তবে এই বিষয়ে আজকে এই পোস্টে আমি বিশদভাবে আলোচনা করব। আপনারা ভাবছেন দাঁত একটি স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু না আপনি জানেন যে, মানুষের প্রতিটি অঙ্গে পতঙ্গের মূল্য অনেক বেশি।

তাই দাঁতের সমস্যায় অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব এর চিকিৎসা নিন। কেননা দাঁত মানুষের মূল্যবান অঙ্গের মধ্যে একটি। এ ছাড়াই কথাই রয়েছে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিন। তাই আসুন জেনে নেই দাঁতের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার।

পেজ সূচিপত্র: দাঁতের রোগ ও প্রতিকার- দাঁত ভালো রাখার ৬টি উপায়


দাঁতের ক্ষয় বা এনামেল ধ্বংস রোগ এবং তার প্রতিরোধ 

দাঁতের ক্ষয় বা এনামেল ধ্বংস রোগ দাঁত গুলিকে প্রবাহিত করে। এমন রোগ গুলি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে এবং সঠিকভাবে পরিচালনা না হলে মৌখিক স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন দাঁত ক্ষয়ের বিষয়টি এটাকে কারিজ বা কাভিটিস বলা হয়। দাঁতের ক্ষয় হলো দাঁতের এনামেলের ধ্বংস। আপনার দাঁতের শক্ত বাইরে যে অংশটুকু থাকে সেটি ক্ষয় হয়ে যাওয়া বা ধ্বংস হয়ে যাওয়াকে বোঝায়। তবে এই দাঁতের ক্ষয়ের জন্য কিছু কারণ আছে। 

যেমন- খারাপ মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি, মিষ্টি জাতীয় বা চিনিযুক্ত খাবার ঘন ঘন খাওয়া, খাবারে স্ন্যাকিং এবং ক্লোরাইডের অভাব থাকলে এই ধরনের রোগ হয়। এই রোগ যখন হয় তা বুঝবেন যেভাবে তা হচ্ছে দাঁতের ব্যথা, মিষ্টি খাবারের প্রতি সংবেদনশীল। দাঁতের ক্ষয় রোধ করার জন্য ভালো মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং খাদ্য তালিকা গত খাবারের পছন্দ এবং নিয়মিত দাঁতের যত্নের সমন্বয়ে করে দাঁত ক্ষয় রোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে যেমন-

উত্তম ভাবে মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা

ব্রাশ করা ব্রাশ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই দিনে অন্তত দুবার ক্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। নরম ব্রিসলস যুক্ত একটি টুথব্রাশ ব্যবহার করুন এবং প্রতি তিন থেকে চার মাস অন্তর অন্তর এটি বদলিয়ে নতুনটি ব্যবহার করুন।

ফ্লসিং খাবারের পরে দাঁতের মাঝখানে যে খাবারের অংশ বা টুকরো এবং ফলক লেগে যায় সেগুলো  অপসারণ করার জন্য প্রতিদিন ফ্লস করুন, যেখানে একটি টুথব্রাশ কখনোই পৌছাইতে পারেনা।

মাউথ ওয়াশ মুখের ভিতরে বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব কমাতে এবং দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করতে এন্টি মাইক্রোবিয়াল বা ফ্লোরাইড যুক্ত মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।

খাবারের তালিকায় যা রাখবেন

চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় সীমিত করুন। মিষ্টি এবং অ্যাসিটিক খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যেমন ক্যান্ডি, সোডা এবং ফলের রস খাওয়া কমিয়ে দিন। এগুলো এনামেল ক্ষয় করতে পারে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে উন্নতি সহায়তা করে। এছাড়া স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস, ফল সবজি, বাদাম এবং পনিরের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য বেছে নিন। এগুলো এসিড নিরপেক্ষ করতে এবং দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া প্রচুর পানি পান করুন বিশেষ করে ক্লোরাইডের পানি দাঁত ক্ষয় রোধে সাহায্য করে থাকে। খাওয়ার পরে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

নিয়মিত দাঁতের যত্ন নেয়া

এক্ষেত্রে যদি আপনি অবশ্যই সচেতন নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে পেশাদার ডেন্টিষ্ট এর কাছে দাঁত পরীক্ষার জন্য নিয়মিত যাওয়া দরকার। দাঁতের সমস্যাগুলির প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং এবং যেন বিস্তার লাভ করতে না পারে সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে।ডেন্টাল সিল্যান্ট গুলো পাতলা ক্ষয় রোধ করতে দাঁতের পিছনের চিবানো পিষ্ঠগুলোকে রক্ষার জন্য আবরণ প্রয়োগে ব্যবহার করা হয়।

এগুলি বেশ কয়েক বছর স্থায়ী হয়। প্রতিরক্ষামূলক আবরণ প্রয়োগ করা হয়। এগুলো বেশ কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে এবং শিশুদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।ডেন্টিস্টের অফিসে পেশাদার ফ্লোরাইড চিকিৎসা এনামেলকে শক্তিশালী করতে পারে এবং দাঁতগুলিকে আরো ক্ষয় প্রতিরোধ করে তুলতে পারে। এই চিকিৎসা গুলিতে থাকা মুখের গহ্বরের বেশি ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।

ফ্লোরাইড টুথপেস্ট এনামুলের পুনঃ খনন করতে এবং ক্ষয় রোধ করতে ব্যবহার করতে পারেন।  অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য ওভার দ্যা কাউন্টার বা প্রেসক্রিপশন ফ্লোরাইড জেল ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করুন। আপনার যদি দাঁত ক্ষয় হবার ঝুঁকি বেশি থাকে পাশাপাশি ফ্লোরাইডের জল পান করতে পারেন যা দাঁতের ক্ষয়কে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন

এক্ষেত্রে স্ন্যাকিং সীমিত করতে বলা হয়েছে। ঘনঘন  স্ন্যাকিং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপাদিত এসিডের সাথে আপনার দাঁতের এক্সপোজার বাড়াই। খাবারের মধ্যে স্ন্যাকস সীমিত করার চেষ্টা করু।ন তামাক বা ধূমপান দ্রব্য ব্যবহার মাড়ির রোগ এবং দাঁতের ক্ষয় হতে সহায়তা করে।

চিউইং সুগার ফ্রী গাম

চিনি মুক্ত আঠা চিবানো লালা প্রবাহ বাড়ায়। যা এসিডকে নিরপেক্ষ করতে খাদ্যের কোনা ধুয়ে ফেলতে এবং এনামেলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। কিছু চিনি- মুক্ত মাড়িতে জাইলিটল থাকে এটি প্রাকৃতিক মিষ্টি যা ক্ষয় সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি কমাতে পারে।

ব্রাশ করার ক্ষেত্রে মৌখিক শিক্ষা

নিশ্চিত করুন যে আপনি সঠিক ব্রাশিং এবং ফ্লসিং কৌশল জানেন। আপনার ডেন্টিস্ট বা হাই জিনিস্ট নির্দেশিকা এবং প্রদর্শনী প্রদান করতে পারেন। এছাড়া ছোটবেলা থেকে বাচ্চাদের ভালো ওরাল হাইজিনের গুরুত্ব শিখান। তাদের ব্রাশিং এবং ফ্লসিং চোখে চোখে রাখুন যতক্ষণ না তারা নিজেরাই এটি কার্যকর ভাবে করতে পারে।

ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট যুক্ত ডেন্টাল পণ্য বিবেচনা করুন

ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট ধারণকারী পণ্য যেমন নির্দিষ্ট টুথপেস্ট এবং চুইংগ্রাম এনামেল কে ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

এন্টিব্যাকটেরিয়াল ব্যবহার

এক্ষেত্রে আপনার ডেন্টিস্ট মুখের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া কমাতে ক্লোরহেক্সিডিনের মতো এন্টি ব্যাকটেরিয়াল মাউথ রেন্সের পরামর্শ দিতে পারেন। পাশাপাশি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল টুথপেস্টে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট থাকে যা প্লাক নিয়ন্ত্রণ করতে এবং দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।এই কৌশলগুলো একত্রিত করে আপনি কার্যকর ভাবে দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে পারেন এবং ভালো মৌখিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারেন। গহ্বর এবং অন্যান্য দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধে নিয়মিত দাঁতের পরিদর্শন এবং সঠিক মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দাঁতের মাড়ির প্রদাহ রোগ ও তার প্রতিকার

দাঁতের মাড়ির প্রদাহ রোগকে পিরিওডেন্টাল ডিজিজ বা জিঞ্জিভাইটিস বলা হয়। বিশেষ করে মাড়ির রোগের মৃদুতম রোগ মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টি করে। মাড়ির লাল হয়ে যাওয়া, ফোলা এবং রক্তপাত হয় এই রোগের কারণে। মাড়ির রোগের আরো একটি মারাত্মক ক্ষতি যার ফলে নরম টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। দাঁতকে সমর্থনকারী হাড় কেউ ধ্বংস করে ফেলে। এর লক্ষণ হচ্ছে দাঁত থেকে মাড়ি সরে যাওয়া, দাঁত ও মাড়ির মধ্যে গভীর পকেট তৈরি হওয়া, ঢিলা দাঁত, নিঃশ্বাসের দূর্গন্ধ। মাড়ির রোগের চিকিৎসা পরিচালনা করতে সাধারণত দাঁতের ডাক্তারদের দ্বারাই ব্যবহৃত চিকিৎসা গুলি এখানে উল্লেখ করা হলো-

সার্জিক্যাল ছাড়া যে চিকিৎসা

স্কেলিং এবং রুট প্ল্যানিং এক্ষেত্রে এর গভীরে পরিষ্কারের পদ্ধতিটি মাড়ির লাইনের নিচ থেকে ফলক এবং ক্যালকুলাস অপসারণ করে এবং দাঁতের দাগ গুলোকে মসৃণ করে। যার ফলে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং মাড়িকে নিরাময় করতে এবং দাঁতের শিকড়ের সাথে পুনরায় সংযুক্ত করতে সাহায্য করে।

এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করতে এন্টিবায়োটিক গুলি নির্ধারিত হতে পারে। এগুলি ট্রপিক্যাল মাড়িতে প্রয়োগ করা যেতে পারে বা আরও গুরুতর ক্ষেত্রে মুখে মুখে নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া পেশাদার ডেন্টাল ক্লিনিং নিয়মিত পরিষ্কার করার মাধ্যমে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ফ্ল্যাগ এবং ক্যালকুলাস বিল্ড আপ অপারেশন করতে সাহায্য করে যা মাড়ির রোগে অবদান রাখতে পারে।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা

ফ্ল্যাপ সার্জারি বা পকেট কমানোর সার্জারির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র স্কেলিং এবং রুট প্ল্যানিং কার্যকর নয়। ফ্ল্যাপ সার্জারি করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে মাড়ি পিছনে তোলা হয়, টারটার সরানো হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হাড়ের অনিয়মিত পৃষ্ট গুলোকে মসৃণ করা হয়। যার কারণে মাড়ি এবং দাঁতের মধ্যে পকেটের গভীরতা হ্রাস পায়। পরিষ্কার রাখা সহজ করে তোলে, সুস্থ হাড়ের সাথে মাড়ির টিস্যু পুনরায় সংযুক্তি স্থাপন করে।

হাড় এবং টিস্যু গ্রাফ্ট এক্ষেত্রে হাড়ের কলম করার মধ্যে আপনার নিজের হার, কৃত্রিম হার ,বা দান করা হাড়ের টুকরো ব্যবহার করে মাড়ির রোগে ধ্বংস হওয়ার হার প্রতিস্থাপন করা হয়। টিস্যু গ্রাফটিং এর মধ্যে আপনার মুখের অন্য জায়গা থেকে টিস্যু নেয়া বা উন্মুক্ত দাঁতের শিকড় ঢেকে রাখার জন্য সিন্থেটিক সামগ্রী ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে হারানো হাড় এবং টিস্যু পুনরুতপাদন করে দাঁতকে স্থিতিশীল করতে এবং মাড়ির আর ও মন্দা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

গাইডেড টিস্যু রিজেনারেশন এই পদ্ধতিতে একটি অস্ত্রপাচার হয় যা মাড়ির রোগ দ্বারা ধ্বংস হওয়া হার এবং টিস্যুর পুনরুতপাদন করতে ব্যবহৃত হয়। অবাঞ্চিত টিস্যু নিরাময় এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার জন্য মাড়ির টিস্যু এবং হাড়ের মধ্যে বায়োকম্প্যাটিবল মেমব্রেনের একটি ছোট টুকরা ঢোকানো হয়। এতে হাড়কে আবার বৃদ্ধি পেতে দেয়। যার ফলে হার এবং টিস্যুর পুনর্জন্মকে উৎসাহিত করে মেরামত এবং সহায়ক কাঠামোতে সহায়তা করে।

চলমান রক্ষণাবেক্ষণ এবং বাড়ির যত্ন

  • ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দিনে দুইবার ব্রাশ করুন
  • দাঁতের মাঝখানে এবং মাড়ি বরাবর প্লেক এবং ধ্বংসাবেশ অপসারণ করতে প্রতিদিন নিয়মিত ফ্লস করুন।
  • ব্যাকটেরিয়া এবং  প্লেক কমাতে এন্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন।
  • নিরীক্ষণ করতে এবং রোগের পুনরাবৃত্তি ব্যাহত করতে নিয়মিত ডেন্টাল ভিসিট করুন।

লাইফ স্টাইল এর পরিবর্তনে ধুমপান নিরাময়কে ব্যাহত করতে পারে এবং মাড়ির রোগের অগ্রগতির ঝুঁকি বাড়ায় তাই ধূমপান ত্যাগ করতে হবে এবং ফল শাকসবজি গোটা শস্য সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য খেতে হবে

এই চিন্তাগুলি অনুসরণ করে এবং ভালো মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি অভ্যাস বজায় রাখার মাধ্যমে আপনি মাড়ির রোগ ভালো করতে পারেন এবং অগ্রগতি রোধ করতে পারেন। এছাড়া আপনার অবস্থা তীব্রতার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতকৃত চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করতে এবং চলমান দাঁতের যত্ন নিশ্চিত করতে আপনার দাঁতের ডাক্তারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অপরিহার্য।

দাঁত সংবেদনশীল হয়ে যাওয়া এবং তার প্রতিকার

দাঁতের সংবেদনশীলতা হল গরম বা ঠান্ডা তাপমাত্রার মতো নির্দিষ্ট উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়ায় দাঁতে অসস্তি বা ব্যথা অনুভব করা। এর প্রধান কারণ এনামেল পরিধান, মাড়ির মন্দা, উন্মুক্ত দাঁতের শিকড়, ফাঁটা দাঁত বা দাঁতের পদ্ধতি। এক্ষেত্রে সংবেদনশীল টুথপেস্ট ফ্লোরাইড চিকিৎসা উন্মুক্ত শিকড় ঢেকে দেওয়ার জন্য দাঁতের চিকিৎসা নেয়া যেতে পারে। এখানে দাঁতের সংবেদনশীলতা চিকিৎসার জন্য সাধারণ পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হলো-

অসংবেদনশীল টুথপেস্ট অসংবেদনশীল টুথপেস্টে এমন জৈব রয়েছে যা দাতের পৃষ্ঠ থেকে স্নায়ুতে  সংবেদন সংক্রমণকে ব্লক করতে সহায়তা করে থাকে। এতে এই টুথপেস্ট প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করতে কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন লাগতে পারে।

ফ্লোরাইড প্রয়োগ দাতের এনামেলকে শক্তিশালী করতে এবং সংবেদনশীলতা কমাতে আপনার ডেন্টিস্ট ফ্লোরাইড বার্নিশ বা জেল প্রয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে এনামেল পুনঃখনন করতে এবং বিশেষ করে এনামেলের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা কমাতে সাহায্য করে।

ডেন্টাল সিলেন্ট ডেন্টাল সিলেন্ট হল পাতলা প্লাস্টিকের আবরণ যা গুড়ের চিবানো পৃষ্ঠে প্রয়োগ করা হয় যাতে সেগুলি ক্ষয় থেকে রক্ষা করা যায়। এবং সংবেদনশীলতা কমানো যায়। এক্ষেত্রে উন্মুক্ত ডেন্টিন (এনামেল এর নিচে সংবেদনশীল স্তর) ঢেকে রাখতে এবং গরম ও ঠান্ডার প্রতি সংবেদনশীলতা কমাতে সাহায্য করে।

গাম গ্রাফটিং উন্মুক্ত দাঁতের শিকড়ের কারণে যদি মাড়ির সংবেদনশীলতা সৃষ্টি হয় তাহলে মাড়ির গ্রাফটিং সার্জারীর সুপারিশ করা যেতে পারে। এতে আপনার মুখের অন্য অংশ থেকে মাড়ির টিস্যু নেওয়া এবং উন্মুক্ত শিকড় ঢেকে রাখার জন্য সিন্থেটিক উপাদান ব্যবহার করা হয়।

রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্ট দাঁতের সংবেদনশীলতার গুরুতর ক্ষেত্রে যেখানে অন্যান্য চিকিৎসা কার্যকর হয়নি রুট ক্যানেল থেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। আর ও সংবেদনশীলতা থেকে রক্ষা করার জন্য দাঁত থেকে স্নায়ু এবং সজ্জা অপসারণ রুট ক্যানেল পরিষ্কার ও সিল করা হয়ে থাকে।

মৌখিক স্বাস্থ্যবিধির অভ্যাস পরিহার করতে হবে যেমন-

  • এনামেল পড়া এবং মাড়ির মন্দা এড়াতে একটি নরম ব্রিস্টেড টুথব্রাশ এবং মৃদু বাস করার কৌশল ব্যবহার করতে পারে।
  • দাঁতের অ্যানিমেল ক্ষয় করতে পারে এমন এসিড খাবার এবং পানীয় ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
  • দাঁত পিষে যাওয়ার কারণে যদি দাঁতের সংবেদনশীলতা হয়ে থাকে তাহলে রাতে মাউথ গার্ড ব্যবহার করতে পারেন।
  • দাঁত সাদা করার কিছু পণ্য এবং পদ্ধতি দাঁতের সংবেদনশীলতা কে বাড়াতে সাহায্য করে এই ধরনের পণ্য ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।
  • এছাড়া প্রতিদিন টুথপেস্ট এবং ফ্লস দিয়ে দিনে দুইবার আলতোভাবে দাঁত ব্রাশ করুন। এক্ষেত্রে একটি নরম টুথব্রাশ ব্যবহার করতে হবে যেন সংবেদনশীল দাঁত এবং মাড়ির জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
দাঁতের সংবেদনশীলতার মূল কারণটি সমাধান করে এবং এই চিকিৎসা কৌশল গুলি অনুসরণ করে আপনি সংবেদনশীলতা হ্রাস করতে পারেন। আপনার মৌখিক আরাম এবং সামগ্রিক দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারেন। সেই সাথে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি দাঁতের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ চালিয়ে যেতে পারেন।

দাঁতের সংক্রমণ হওয়া এবং এ থেকে রক্ষার উপায়

দাঁতের সংক্রমণ বলতে সাধারণত ফোড়া রোগটাকে বোঝানো হয়েছে। এই ফোড়া হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে পোজের একটি থলে। এটি মূলের অগ্রভাগে বা মারিতে হতে পারে। এতে করে প্রচন্ড দাঁতের ব্যথা, ফোলাফোলা ভাব, জ্বর, মুখে খারাপ স্বাদ, লিম্ফনোড ফোলা ইত্যাদি দেখা যায়। এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে দাঁতের পদ্ধতি এবং ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। দাঁত সংক্রমনের চিকিৎসায় যে পদ্ধতিগুলো রয়েছে সেগুলো এখানে তুলে ধরা হলো-

রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্ট
এই ট্রিটমেন্ট সাধারণত গভীর ক্ষয় বা আঘাত জনিত কারণে দাঁতের পাল্পে পৌঁছে যাওয়া সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু অপ্রসারণ, রুট ক্যানেল পরিষ্কার করা এবং আরও সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য এটি সেল করা প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে দাঁতের গঠন সংরক্ষণ থাকে এবং সংক্রমণের সাথে যুক্ত ব্যথা উপশম করে।

অ্যান্টিবায়োটিক
এক্ষেত্রে আপনার ডেন্টিস্ট আপনাকে এন্ডডোন্টিস্ট দাঁতের পদ্ধতির আগে বা পরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে যেমন- এমোক্সিসিলিন, পেনিসিলিন, ক্লিন্ডামাইসিন মেট্রোনিডাজল এগুলো সংক্রমণ এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে।

ছেদ বা নিষ্কাশন
ফোড়া বা গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে আপনার ডেন্টিস্টকে নিরাময় প্রচারের জন্য একটি ছেদনের পুঁজ বের করে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে নিষ্কাশনের অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি ছোটকাটা এবং পুঙ্খানুপুভাবে পরীক্ষা করা এবং জীবাণু মুক্ত করা।

নিষ্কাশন
যদি দাঁতটি গুরুতরভাবে সংক্রমিত হয় এবং রুট ক্যানেল যদি করা না যায় তাহলে আশেপাশের দাঁত ও টিস্যুতে সংক্রমনের বিস্তার ছড়িয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সংক্রামিত দাঁত তুলে ফেলাই ভালো। এক্ষেত্রে ব্রিজ বা ডেন্সার দিয়ে প্রতিস্থাপন করা ভালো।

ব্যথা ব্যবস্থাপনা
অভার দা কাউন্টার ব্যথা উপশমকারী যেমন আইবোপ্রফেন বা প্রেসক্রিপশনে ।ব্যথার ঔষধ দাঁতের সংক্রমনের সাথে সম্পর্কিত ব্যথা এবং অস্বস্তি পরিচালনা করার জন্য নির্ধারিত হতে পারে এছাড়া উষ্ণ নোনা জলে ধুয়ে ফেলতে হবে। তা ফোলা কমাতে এবং ব্যথা অপসারণ করতে সাহায্য করতে পারে।

ফোড়া নিষ্কাশন
এক্ষেত্রে যে ফোড়াটি দেখা যায় বা পুঁজে ভর্তি রয়েছে€। আপনার ডেন্টিস্ট চাপ কমাতে এবং নিরাময়কে উন্নত করার জন্য এটি নিষ্কাশন করতে পারেন। যদি বিষয়টা আরো জটিল হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে দাঁতের সংক্রমণের জন্য সর্বদা একজন ডেন্টাল পেশাদার ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।

দাঁত পিষে যাওয়া রোগ এবং তা থেকে মুক্তি লাভ

ব্রক্সিজম হল দাঁত পিষে যাওয়া বা চেপে ধরা। এটি প্রায় ঘুমের সময় ঘটে থাকে। এর কারণ হচ্ছে স্ট্রেস, উদ্বেগ, অস্বাভাবিক কামড় বা অনুপস্থিত বাঁকা দাত। এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে জীর্ণ দাঁত, দাঁতের সংবেদনশীলতা, চোয়ালে ব্যথা, মাথাব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এখানে দাঁত পিষে যাওয়া চিকিৎসার উপর কয়েকটি বিষয় আলোচনা করা হলো-

মাউথ গার্ড এবং স্প্লেন্ট
এক্ষেত্রে মাউথ গার্ডগুলো ডেন্টিস্ট এর পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের সময় দাঁতের বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য পরা হয়। স্প্লিন্টস ডিভাইজ গুলি মাউন্ট গার্ডের মতোই তবে দিনের বেলাতেও পরা যেতে পারে। তারা চোয়ালকে স্থিতিশীল করতে এবং পেশির চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং আচরণগত থেরাপি

যেহেতু স্ট্রেস ব্রক্সিজমের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ট্রিগার তাই যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং গভীর শ্বাসের ব্যায়ামের মতো পদ্ধতি গুলো উপকারী হতে পারে। কগনিটিভ ভিয়াবিয়ার থেরাপি এই ধরনের রোগীদের অন্তর্নিহিত মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলিকে মোকাবেলা করে তাদের গ্রাইডিং অভ্যাস পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। বায়ো ফিডব্যাক নামে একটি কৌশল রয়েছে এ কৌশলটি চোয়ালের পেশী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যক্তিদের শিখানোর জন্য মনিটরিং ডিভাইস ব্যবহার করে কাজ করা হয়।

ওষুধের ব্যবহার
চোয়ালের পেশীর টান কমাতে স্বল্পমেয়াদি রিলাক্সন্ড ব্যবহার করা হয়। এছাড়া চোয়ালের বেশি টান যদি জটিলতর হয়ে থাকে তবে বোটক্স ইনজেকশন চোয়ালের পেশিতে দেয়া হয়। যাতে সেগুলি দুর্বল হয়  এবং দাঁত পিষে ফেলার ক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে। যদি এই রোগটি বা এই ব্রক্সিজমটি মানসিক চাপের সাথে যুক্ত হয়। তাহলে এন্টিডিপ্রেশন বা এন্টি এনজাইটি ওষুধের মতো ওষুধের সুপারিশ করা যেতে পারে।

দন্তের সংশোধন
অর্থডেন্টিক ট্রিটমেন্টটি মিসলাইন করা দাঁত বা কামরের সমস্যায় বক্সিজমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। দাঁত জীর্ণ হয়ে গেলে তাদের সঠিক আকৃতি এবং কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে ক্রাউন ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়।

এছাড়া নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি বজায় রাখা। ঘুমানোর সময় আরামদায়ক রুটিন তৈরি করা এবং আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করা মাধ্যমে কিছুটা নিরাময় পাওয়া যেতে পারে।


নির্দিষ্ট ব্যায়াম চোয়ালের পেশিকে শক্তিশালী করতে এবং শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে যা নাকাল হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
এছাড়া নিয়মিত চেকআপ, ডেন্টিসকে দাঁত ও চোয়ালের অবস্থা নিরীক্ষণ করতে দেয়া যেতে পারে আর দাঁতের ডাক্তাররা ব্রক্সিজম পরিচালনার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং প্রাথমিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করতে পারেন।

ভাঙ্গা বা ফাঁকা দাঁত রোগ এবং এ বিষয়ে করণীয়

দাঁত আঘাত প্রাপ্ত হলে, পিষে যাওয়া বা শক্ত জিনিস কামড়ানোর কারণে দাঁতে ফাটল বা ভেঙ্গে যেতে পারে। এক্ষেত্রে চিবানোর সময় ব্যথা, তাপমাত্রার প্রতি সংবেদনশীলতা, তীক্ষ্ণ ব্যথা, দৃশ্যমান ফাটল বা ভাঙ্গা দেখা যেতে পারে। দাঁতের ফাটা বা ভাঙ্গা দাঁতের চিকিৎসা নির্ভর করে ফাটল বা ফ্র্যাকচারের তীব্রতার উপর। এখানে দাঁতের চিকিৎসকদের দ্বারা ফাটা বা ভাঙ্গা দাঁতের সমাধানের জন্য কয়েকটি চিকিৎসার কথা উল্লেখ করা হলো-

ডেন্টাল বন্ডিং
ডেন্টাল বন্ডিং যা কম্পোজিট বন্ডিং নামেও পরিচিত। এতে ছোট চিপ বা ফাটল মেরামতের জন্য দাঁতের পৃষ্ঠে দাঁতের রঙের রঞ্জন উপাদান ব্যবহার করা হয়। ডান্টিস দাঁতের উপরিভাগ খোদায় করেন বন্ধন উপাদান প্রয়োগ করার জন্য এটিকে পছন্দ আকারে ঢালাই করেন এবং তারপর একটি বিশেষ আলো দিয়ে এটিকে শক্ত করে দেন।

ডেন্টাল ক্যাপ বা ক্রাউন

এই ক্যাপ দাঁত পুনরুদ্ধার করতে ব্যবহৃত হয়। যেগুলি ব্যাপক ক্ষতি যেমন- বড় ফাটল, ফাটল বা রুট ক্যানেল চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। দাঁতের ডাক্তার ক্ষতিগ্রস্ত বা ক্ষয়প্রাপ্ত অংশগুলি সরিয়ে দাঁত প্রস্তুত করেন। একটি কাস্টম নির্মিত মুকুটের জন্য সাপ নেন এবং একটি অস্থায়ী মুকুট রাখেন যখন স্থায়ীটি তৈরি হয়। একবার প্রস্তুত হয়ে গেলে স্থায়ী মুকুটটি জায়গায় সিমেন্ট করা হয় যা অবশিষ্ট দাঁতের গঠনকে ঢেকে রাখে এবং রক্ষা করে।

ডেন্টাল ভিনিয়ার্স
এই প্রক্রিয়ায় ছোটখাটো বা চিপ দিয়ে সামনের দাঁত মেরামত করতে বা নান্দনিক উদ্যোগের সাথে দাঁতের চেহারা উন্নত করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে পাতলা চিনামাটির বাসন বা কাস্টম মেড এবং আকৃতি, রং এবং কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করার জন্য দাঁতের সামনের পৃষ্ঠের সাথে বন্ধন যোগ করা হয়।

রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্ট
যদি ফাটল দাঁতের পাল্পে প্রসারিত হয় ব্যথা বা সংক্রমণ ঘটায় তাহলে রুট ক্যানেল চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে সংক্রামিত বা ক্ষতিগ্রস্ত মজ্জা অপসারণ, রুট ক্যানেল পরিষ্কার এবং আকার দেওয়া সেই সাথে এটি একটি ভরাট উপাদান দিয়ে সিল করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতের উপরে একটি মুকুট স্থাপন করা হয়।

ডেন্টাল এক্সট্রাকশন
গুরুতর ফাটল বা ফ্রাকচারের ক্ষেত্রে যেখানে অন্যান্য চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁত পুনরুদ্ধার করা যায় না নিষ্কাশন প্রয়োজন হতে পারে সেখানটাই এক্ষেত্রে ডেন্টিস্ট বা ওরাল সার্জন দাঁত অপসারণ করেন এবং এটি প্রতিস্থাপনের জন্য বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। যেমন- এমপ্ল্যান্ট ব্রিজ বা ডেনচার।

ডেন্টাল স্প্লিন্ট
অস্থিরতা বা নড়াচড়ার কারণে ফাটল যুক্ত দাঁতগুলোর জন্য দাঁতকে স্থিতিশীল করতে এবং আরো ক্ষতির রোধ করতে একটি ডেন্টাল স্প্লিন্ট প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আক্রান্ত দাঁত এবং প্রতিবেশী দাঁতের সাথে একটি কাস্টম-মেড স্প্লিন্ট বন্ধন জড়িত যাতে নিরাময়ের সময় সেগুলোকে যথাযথ স্থানে ধরে রাখতে পারে।

আচরণগত পরিবর্তন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
এক্ষেত্রে শক্ত বা কুচকানো খাবার খাওয়ার ব্যবহার কম করতে হবে। যা ফাটা বা দুর্বল দাঁত কে আরো ক্ষতি করতে পারে। খেলাধুলা বা ক্রিয়াকলাপের সময় একটি কাস্টম ফিড করার জন্য মাউথ গার্ড পরুন যা দাঁতের আঘাতের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে। নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ করাতে হবে এবং যে দাঁত ফাটল ফ্র্যাকচার হয়েছে তা প্রতিরোধ সহায়তা করতে পারে।

বাড়িতে যত্ন
ফলক বা ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে ফ্লোরাইড টুথপেস্ট বা ফ্লস দিয়ে দিনে দুইবার দাঁত ব্রাশ করুন। এনামেলকে শক্তিশালী করতে এবং ক্ষয়ের ঝুঁকি কমাতে আপনার ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ফ্লোরাইড মাউথওয়াশ যুক্ত করে তা প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।

ফাটা বা ভাঙ্গা দাঁতগুলিকে অবিলম্বে মোকাবেলা করে এবং সুপারিশকৃত চিকিৎসা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করে আপনি সর্বাত্মক মৌখিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং এবং জটিল দাঁতের জটিলতা গুলি প্রতিরোধ করতে পারেন। এছাড়া আপনার নির্দিষ্ট দাঁতের চাহিদা এবং অবস্থার তীব্রতার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতকৃত পরামর্শ এবং চিকিৎসার বিকল্প গুলির জন্য সর্বদা আপনার দাঁতের ডাক্তারদের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন।

শেষ কথা

যদি আপনার দাঁতের কোন সমস্যা হয়ে থাকে, তবে যদি নিয়মমাফিক জীবন পরিচালনা করা হয় এবং সঠিক চিকিৎসা নেওয়া হয় তবে সেখান থেকে উত্তরোত্তর উন্নতি পাওয়া সম্ভব। বিভিন্ন ডিভাইস, ম্যানেজমেন্ট, লাইফ স্টাইল পরিবর্তন এবং চিকিৎসা হস্তক্ষেপের সংমিশন কার্যকর ভাবে যদি উপসর্গ গুলি পরিচালনা করা হয় তা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। পরামর্শ করার জন্য একজন ডেন্টিস্ট বা স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা যেতে পারে। একটি উপযোগী চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যা ব্যক্তির নির্দিষ্ট চাহিদা এবং দাঁতের বিভিন্ন চিকিৎসার অন্তর্নিহিত কারণ গুলিকে সমাধান করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url